বিজ্ঞপ্তি:
দৈনিক শাহনামার অনলাইন ভার্সনে আপনাকে স্বাগতম। জাতীয়, রাজনীতি, খেলাধুলা, বিনোদন সহ সকল সংবাদের সর্বশেষ আপডেট জানতে ভিজিট করুন www.shahnamabd.com

সরকারি বিএম কলেজের হলের ছাদ ধসে আহত ৪

সরকারি বিএম কলেজের হলের ছাদ ধসে আহত ৪

নিজস্ব প্রতিবেদক:  বরিশাল সরকারি ব্রজমোহন (বিএম) কলেজের মহাত্মা অশ্বিনী কুমার ছাত্রাবাসের ছাঁদ ধসে ৪ শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। আজ ৩০ সেপ্টেম্বর দিবাগত রাত সাড়ে ৪ টার দিকে বরিশাল  ছাত্রাবাসের  এ-ব্লকের ২০৮ নম্বর রুমের ছাদ ধসে এমন ঘটনা ঘটে। আহতরা হলেন, গণিত বিভাগের রেজাউল ইসলাম, মাস্টার্সের শিক্ষার্থী মমিনুল ইসলাম, ৪র্থ বর্ষের শিক্ষার্থী ইমন ও মাসুম।

আহত ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী মমিনুল ইসলাম বলেন, রাত তখন সাড়ে ৪টা, আমরা সবাই ঘুমানো ছিলাম। হঠাৎ বিকট শব্দে আমাদের ঘুম ভেঙ্গে যায়। টের পেলাম পুরো ভবনটি যেনো কেপে উঠলো। রুমের লাইট জ্বালিয়ে দেখি রুমের উপরের ছাদের থালাই খসে পড়েছে। মশারি টানিয়ে ঘুমানোর ফলে খসে পড়া পলেস্তারের কিছু অংশ মশারির উপর পড়ে। তবে মশারি টানানো না থাকলে পলেস্তরা আমাদের উপর সরাসরি পরে জীবনও চলে যেতে পারতো। একমাত্র আল্লাহ রক্ষা করেছেন।

আহত রেজাউল ইসলাম বলেন, আমরা সবাই ঘুমানো ছিলাম এসময় হঠাৎ করেই ছাঁদের ঢালাইয়ের কয়েকটি বড় বড় অংশ ধ্বসে পড়ে ।

কলেজ সূত্রে জানা গেছে- ১৯৬৫ সালে কলেজ জাতীয়করণ হওয়ার পর কলেজের নতুন ক্যাম্পাসে  অশ্বিনী কুমার হল ১৯৬৮ সালে নির্মাণ করা হয়। যুগের পর যুগ বিএম কলেজের শিক্ষার্থীরা ব্যবহার করে আসছে। জনপ্রতি বাৎসরিক ৫ হাজার টাকা ভাড়ায় প্রতি রুমে ৬-৮ জন শিক্ষার্থী থাকেন। বর্তমানে এখানে রয়েছেন প্রায় ৬০০ শিক্ষার্থী।

সেখানকার শিক্ষার্থীদের আতঙ্কের সাথে দুর্ভোগও শেষ নেই। রুমের স্যাঁতস্যাঁতে পরিবেশ। ভবনের অনেক জায়গায় ছাদের পলেস্তারা খসে গেছে, বৃষ্টির সময় অনেক জায়গা থেকে পানিও পরে, রুমের ভেতরে নিয়মিতই খসে পড়ে দেয়ালের পলেস্তার, ভবনের গোসলখানা, টয়লেটের অবস্থাও অশোচনীয়। তাছাড়া মাদক সেবীদের নিয়মিত আখড়ায় পরিনত হয়েছে ছাত্রাবাসটি। ছাত্রাবাসের কমপক্ষে ১০-১২ রুমে নিয়মিত মাদকের আসর বসে। তাছাড়া প্রশাসনের মদদে রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় কমপক্ষে ২৫ টি রুমে কোন বরাদ্ধ নেই। এসব রুমে যারা থাকে তারা তাদের মত করে রুম ভাড়া দেন।

ছাত্রাবাসে বসবাসরত কয়েকজন শিক্ষার্থী বলেন, দূরদূরান্ত থেকে বিএম কলেজে পড়তে এসেছেন তারা। বাইরে থাকতে গেলে অনেক খরচ, তাই খরচ কমাতে কষ্ট করে বিএম কলেজের এই হোস্টেলেই থাকছেন। কিন্তু বর্তমানে ছাত্রাবাসের অবস্থা এতটাই খারাপ যে সব সময়ই তাদের আতঙ্কে থাকতে হয়।

তাদের ভাষ্য, কলেজের ভেতরে অনেক দৃষ্টিনন্দন ভবন থাকলেও শিক্ষার্থীদের ছাত্রাবাস ভবনের সংস্কার এবং নতুন ভবন নির্মাণে কেন কর্তৃপক্ষের অনীহা, সেটা তাদের জানা নেই। তারা দ্রুত শিক্ষার্থীদের জন্য নতুন ভবন নির্মাণ করার দাবি জানান।

এ বিষয়ে হলের ছাত্ররা কয়েকবার কলেজ প্রশাসনের শরণাপন্ন হলেও তাদের আশ্বাস দেয়া ছাড়া দেয়া হয়নি কোনো সমাধান।

এব্যাপারে জানতে চাইলে ছাত্রাবাসের তত্ত্বাবধায়ক এস এম আসাদুজ্জামান বলেন ছাত্রাবাসের চারটি ভবনের তিনটি ব্যবহার অনুপোযোগী। ঝুকি নিয়ে ছাত্ররা বসবাস করে। ছাত্রাবাসে বসবাসরত অধিকাংশ শিক্ষার্থী ভাড়া পরিশোধ করেনা, যে টাকা বছরে বরাদ্ধ বাবদ পাওয়া যায় তা দিয়ে কোনমতে দৈনন্দিন কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়। ভবন সংস্কার করার মত টাকা ছাত্রাবাসের নেই। দ্রুত ভবনগুলো সংস্কার না করলে যেকোনো সময় বড় ধরনের দূর্ঘটনা ঘটতে পারে।

এবিষয়ে বিএম কলেজ অধ্যক্ষ প্রফেসর ড.  গোলাম কিবরিয়া বলেন, গতরাতের ঘটনা শুনে ডিগ্রি হলের ঐ রুমটি আমরা পরিদর্শন করেছি। শিক্ষা প্রকৌশল বিভাগকে অবহিত করেছি। তারা শীগ্রই হলটি দেখতে আসবেন ও যথাযথ ব্যবস্থা নিবেন।

এসময় তিনি আরও বলেন, এ ব্লকের এই হলটি অনেক পুরোনো তাই এই ধরনের ঘটনা ঘটছে। আমরা অচিরেই সব ছাত্রাবাস গুলো ঠিকঠাক করার চেষ্টা করছি।

Please Share This Post in Your Social Media




All rights reserved by Daily Shahnama
কারিগরি সহায়তা: Next Tech